• বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

আমেরিকার নির্বাচন

একজন চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় এসেছে

আমেরিকার নির্বাচন

একজন চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় এসেছে

  আন্দোলন প্রতিবেদন  

বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪  |  অনলাইন সংস্করণ

৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট কুখ্যাত-ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে সে শপথ নেবে। সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান নিয়ন্ত্রক আমেরিকার এই নতুন প্রেসিডেন্ট সেই দেশের শোষিত শ্রমিক শ্রেণি বা বিশ্বের শ্রমিক-কৃষক নিপীড়িত জনগণের জন্য এক ভয়ানক বিপদ। 

নির্বাচনের সময় থেকেই ট্রাম্প বলে আসছে সে নির্বাচিত হলে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনের যুদ্ধ বন্ধ করবে। সেটা কতটা সম্ভব হবে সে সম্পর্কে এখনি মন্তব্য করা না গেলেও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্বে চলমান যুদ্ধের পুনর্গঠন যে করবে তা বলা যায়। যার হতে পারে চীনা সামাজিক সাম্রাজ্যবাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও লড়াইকে কেন্দ্রবিন্দু করা। অর্থাৎ ট্রাম্প চীনের সাথে দ্বন্দ্বকে সামনে নিয়ে আসতে পারে। যার পরিণতি হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলা।

আর আমেরিকার নির্বাচনি গণতন্ত্র কেমন যে-নির্বাচনে একজন ফ্যাসিস্ট নির্বাচিত হয়? একেই বলা হয় বুর্জোয়া গণতন্ত্র। যার মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যায়। সেখানকার বুর্জোয়া শ্রেণি এমনভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থা সাজিয়েছে যাতে জনগণ মনে করবে তারা ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি (শাসক) নির্বাচিত করছে। বাস্তবে যা ঘটে থাকে তাহলো, যে-ই নির্বাচিত হোক সে শাসক সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়া শ্রেণিরই স্বার্থ রক্ষা করবে। প্রকৃত সত্য হলো– নির্বাচন হচ্ছে পুঁজিপতি শ্রেণির কোন অংশ আগামী কয়েক বছর তাদের শাসন-শোষণ করবে তার বন্দোবস্ত করার উপায়। যদিও তৃতীয় বিশ্বের থেকে ওখানকার নির্বাচনী গণতন্ত্রে ভিন্নতা রয়েছে।

শত কোটিপতি ট্রাম্প আলোচিত উগ্র ফ্যাসিস্ট হলেও কথিত উদারনৈতিক বাইডেন কম নৃশংস ছিল না। আরো সত্য হচ্ছে, আমেরিকার শাসক শ্রেণির দুই দল বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির কর্মসূচির মধ্যে তেমন একটা পার্থক্য নেই। ক্ষমতার এই পরিবর্তনে আমেরিকার আর্থিক নীতি ও পররাষ্ট্র নীতিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। যেটা হবে তা হলো পলিসিগত। এই দু’দলই হচ্ছে যুদ্ধবাজ গণহত্যাকারী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রক্ষক।

আগেই বলা হয়েছে আমেরিকার নির্বাচনি ব্যবস্থায় কোটিপতি পুঁজিবাদীরাই নির্বাচিত হয় বুর্জোয়া একনায়ত্ব বজায় রাখার জন্য। সেজন্য সেখানকার পুঁজিপতি শ্রেণি নির্ধারণ করে কখন কোন দল কোন নেতৃত্ব তাদের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার জন্য বেশি উপযোগী। তাদেরকেই তারা ক্ষমতায় আনে। যেমনÑ এবারের নির্বাচনে অনেকেই মনে করেছিল হঠকারী-ফ্যাসিস্ট ট্রাম্প হয়তো ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তখন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনী ইলেন মাস্ক ট্রাম্পকে জেতানোর জন্য সরাসরি ট্রাম্পের পক্ষে মাঠে নেমে পড়ে। অবশ্য ট্রাম্পের বিজয়ের ফলশ্রুতিতে মাস্ক শেয়ার বাজারের ব্যবসা থেকে কোটি কোটি ডলার আয় করেও নিয়েছে ইতিমধ্যেই ।

ডোনাল্ড ট্রাম্প খোলাখুলিভাবে খ্রিষ্টান শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী তথা বর্ণবাদের পক্ষে। সে পুরুষতন্ত্র তথা পুরুষেরা শ্রেষ্ঠ এই নারী বিদ্বেষী ও অভিবাসন বিরোধী কর্মসূচি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। যার ফলে আমেরিকার জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাইডেন-কমলার ডেমোক্রাট পার্টি ট্র্যাম্পের এই ফ্যাসিবাদী কর্মসূচির বিরোধিতা করলেও তারাও পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদের রক্ষক অংশীদার। যেজন্য তারা সরকার পরিচালনায় ট্রাম্পকে সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে।

তাহলে আমেরিকার জনগণের করণীয় কী? ট্রাম্পের ফ্যাসিবাদকে উচ্ছেদের লক্ষ্যে সংগ্রাম গড়ে তোলা। কিন্তু বিরোধী দল উদারনৈতিক ডেমোক্রাট পার্টি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান তুললেও তাদের পক্ষে তা বাস্তবায়ন করা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ ফ্যাসিবাদকে উচ্ছেদ করতে হলে পুরো পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থাকে উৎখাত করতে হবে। তার অংশ ডেমোক্রাট পার্টিও। তবে মার্কিন সমাজের মধ্যে ভয়াবহ নৈরাজ্য ও ফাটল বিদ্যমান। জনগণ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হতে চান। কেবলমাত্র মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদের (মালেমা) তত্ত্বে সজ্জিত একটি বিপ্লবী পার্টির নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবই পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করতে পারে। সমাজ বিকাশের ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায় সেখানকার শ্রমিক শ্রেণি তা অবশ্যই করবে।

আমেরিকার নির্বাচন

একজন চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় এসেছে

 আন্দোলন প্রতিবেদন 
বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪  |  অনলাইন সংস্করণ

৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট কুখ্যাত-ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে সে শপথ নেবে। সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান নিয়ন্ত্রক আমেরিকার এই নতুন প্রেসিডেন্ট সেই দেশের শোষিত শ্রমিক শ্রেণি বা বিশ্বের শ্রমিক-কৃষক নিপীড়িত জনগণের জন্য এক ভয়ানক বিপদ। 

নির্বাচনের সময় থেকেই ট্রাম্প বলে আসছে সে নির্বাচিত হলে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনের যুদ্ধ বন্ধ করবে। সেটা কতটা সম্ভব হবে সে সম্পর্কে এখনি মন্তব্য করা না গেলেও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্বে চলমান যুদ্ধের পুনর্গঠন যে করবে তা বলা যায়। যার হতে পারে চীনা সামাজিক সাম্রাজ্যবাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও লড়াইকে কেন্দ্রবিন্দু করা। অর্থাৎ ট্রাম্প চীনের সাথে দ্বন্দ্বকে সামনে নিয়ে আসতে পারে। যার পরিণতি হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলা।

আর আমেরিকার নির্বাচনি গণতন্ত্র কেমন যে-নির্বাচনে একজন ফ্যাসিস্ট নির্বাচিত হয়? একেই বলা হয় বুর্জোয়া গণতন্ত্র। যার মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যায়। সেখানকার বুর্জোয়া শ্রেণি এমনভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থা সাজিয়েছে যাতে জনগণ মনে করবে তারা ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি (শাসক) নির্বাচিত করছে। বাস্তবে যা ঘটে থাকে তাহলো, যে-ই নির্বাচিত হোক সে শাসক সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়া শ্রেণিরই স্বার্থ রক্ষা করবে। প্রকৃত সত্য হলো– নির্বাচন হচ্ছে পুঁজিপতি শ্রেণির কোন অংশ আগামী কয়েক বছর তাদের শাসন-শোষণ করবে তার বন্দোবস্ত করার উপায়। যদিও তৃতীয় বিশ্বের থেকে ওখানকার নির্বাচনী গণতন্ত্রে ভিন্নতা রয়েছে।

শত কোটিপতি ট্রাম্প আলোচিত উগ্র ফ্যাসিস্ট হলেও কথিত উদারনৈতিক বাইডেন কম নৃশংস ছিল না। আরো সত্য হচ্ছে, আমেরিকার শাসক শ্রেণির দুই দল বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির কর্মসূচির মধ্যে তেমন একটা পার্থক্য নেই। ক্ষমতার এই পরিবর্তনে আমেরিকার আর্থিক নীতি ও পররাষ্ট্র নীতিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। যেটা হবে তা হলো পলিসিগত। এই দু’দলই হচ্ছে যুদ্ধবাজ গণহত্যাকারী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রক্ষক।

আগেই বলা হয়েছে আমেরিকার নির্বাচনি ব্যবস্থায় কোটিপতি পুঁজিবাদীরাই নির্বাচিত হয় বুর্জোয়া একনায়ত্ব বজায় রাখার জন্য। সেজন্য সেখানকার পুঁজিপতি শ্রেণি নির্ধারণ করে কখন কোন দল কোন নেতৃত্ব তাদের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার জন্য বেশি উপযোগী। তাদেরকেই তারা ক্ষমতায় আনে। যেমনÑ এবারের নির্বাচনে অনেকেই মনে করেছিল হঠকারী-ফ্যাসিস্ট ট্রাম্প হয়তো ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তখন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনী ইলেন মাস্ক ট্রাম্পকে জেতানোর জন্য সরাসরি ট্রাম্পের পক্ষে মাঠে নেমে পড়ে। অবশ্য ট্রাম্পের বিজয়ের ফলশ্রুতিতে মাস্ক শেয়ার বাজারের ব্যবসা থেকে কোটি কোটি ডলার আয় করেও নিয়েছে ইতিমধ্যেই ।

ডোনাল্ড ট্রাম্প খোলাখুলিভাবে খ্রিষ্টান শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী তথা বর্ণবাদের পক্ষে। সে পুরুষতন্ত্র তথা পুরুষেরা শ্রেষ্ঠ এই নারী বিদ্বেষী ও অভিবাসন বিরোধী কর্মসূচি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। যার ফলে আমেরিকার জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাইডেন-কমলার ডেমোক্রাট পার্টি ট্র্যাম্পের এই ফ্যাসিবাদী কর্মসূচির বিরোধিতা করলেও তারাও পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদের রক্ষক অংশীদার। যেজন্য তারা সরকার পরিচালনায় ট্রাম্পকে সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে।

তাহলে আমেরিকার জনগণের করণীয় কী? ট্রাম্পের ফ্যাসিবাদকে উচ্ছেদের লক্ষ্যে সংগ্রাম গড়ে তোলা। কিন্তু বিরোধী দল উদারনৈতিক ডেমোক্রাট পার্টি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান তুললেও তাদের পক্ষে তা বাস্তবায়ন করা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ ফ্যাসিবাদকে উচ্ছেদ করতে হলে পুরো পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থাকে উৎখাত করতে হবে। তার অংশ ডেমোক্রাট পার্টিও। তবে মার্কিন সমাজের মধ্যে ভয়াবহ নৈরাজ্য ও ফাটল বিদ্যমান। জনগণ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হতে চান। কেবলমাত্র মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদের (মালেমা) তত্ত্বে সজ্জিত একটি বিপ্লবী পার্টির নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবই পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করতে পারে। সমাজ বিকাশের ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায় সেখানকার শ্রমিক শ্রেণি তা অবশ্যই করবে।

আরও খবর
 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র